কাজ : লোহা ও তুঁতের বিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ প্রয়োজনীয় উপকরণ : লোহার গুঁড়া, তুঁতে, পানি, টেস্টটিউব পদ্ধতি : টেস্টটিউবের চার ভাগের এক ভাগ পানি নাও। কিছু তুঁতে যোগ করে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে তুঁতের দ্রবণ তৈরি করো। এবার তুঁতের নীল দ্রবণে কিছু লোহার গুঁড়া যোগ করে ভালোভাবে ঝাঁকাও। কোনো পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছ কি? দ্রবণের নীল রং আস্তে আস্তে হালকা সবুজ হয়ে যাচ্ছে আর তামার ছোট ছোট কণা টেস্টটিউবের তলায় জমতে শুরু করেছে। নীল দ্রবণ কেন হালকা সবুজ হলো? |
এখানে লোহার গুঁড়া (আয়রন) ও কপার সালফেটের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয়েছে। ফলে ফেরাস সালফেট ও কপার তৈরি হয়েছে। উৎপন্ন ফেরাস সালফেটের রং হালকা সবুজ বলেই দ্রবণের রং নীল থেকে হালকা সবুজ হলো।
এখানে লোহা, কপার সালফেট থেকে কপারকে সরিয়ে নিজে ঐ স্থান দখল করে ফেরাস সালফেট তৈরি করেছে। এ সকল বিক্রিয়া যেখানে একটি মৌল কোনো যৌগ থেকে অপর একটি মৌলকে সরিয়ে নিজে ঐ স্থান দখল করে নতুন যৌগ তৈরি করে তাকে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বলে।
তোমরা এখন তুঁতের দ্রবণে জিংক বা দস্তা, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি যোগ করে দেখ কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে।
বিযোজন বিক্রিয়া (Decomposition reaction)
কাজ : চুনা পাথরের বিযোজন বিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ প্রয়োজনীয় উপকরণ : চুনা পাথর, পেচুলা বা চামচ, টেস্টটিউব, নির্গমন নল, বুনসেন বার্নার বা স্পিরিট ল্যাম্প, ক্ল্যাম্প, স্ট্যান্ড, কর্ক ও হাতমোজা পদ্ধতি : হাতমোজা পরে স্পেচুলা বা চামচ দিয়ে প্রায় ৫ গ্রাম চুনাপাথর টেস্টটিউবে নাও। এবার স্পিরিট ল্যাম্প বা বুনসেন বার্নার দিয়ে তাপ দিতে থাক। খুব ভালোভাবে খেয়াল করো কী ঘটছে। |
কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে টেস্টটিউবে নেওয়া চুনাপাথর ভাপ দেওয়ার ফলে বিযোজিত হয়ে বা ভেঙ্গে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস ও ক্যালসিয়াম অক্সাইড উৎপন্ন হচ্ছে।
গ্যাসটি কার্বন ডাইঅক্সাইড কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে পার। অপর একটি টেস্টটিউবে ১-২ মিলিলিটার স্বচ্ছ চুনের পানি নিয়ে একটি নির্গমন নল প্রথম টেস্টটিউবের সাথে লাগাও। দেখবে চুনের পানি ঘোলা হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ উৎপন্ন কার্বন ডাইঅক্সাইড দ্বিতীয় টেস্টটিউবে (নির্গমন নলের মাধ্যমে) যাওয়ার ফলে সেখানে চুনের পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড বিক্রিয়া করে আবার ক্যালসিয়াম কার্বোনেট তৈরি হওয়ায় চুনের পানি ঘোলা হয়ে যাচ্ছে।
নিয়ে বিযোজন বিক্রিয়ার পারও কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো।
কপার কার্বোনেটকে ভাগ দিলে তা ভেঙ্গে কপার অক্সাইড ও কার্বন ডাইঅন্নাইড উৎপন্ন হয়।
পক্ষান্তরে পটাশিয়াম ক্লোরেটকে ভাপ দিলে এটি বিযোজিত হয়ে পটাশিয়াম ক্লোরাইড ও অক্সিজেন গ্যাস উৎপন্ন করে।
এ সকল বিক্রিয়ার মতো যে সকল বিক্রিয়ায় একটি যৌগ ভেঙ্গে একাধিক মৌল বা যৌগ উৎপন্ন হয় তাদেরকে বিযোজন বিক্রিয়া বলে।
আরও দেখুন...